Friday, January 27, 2017

কেনো জাভা শেখা উচিত ?

যে যে কারণে জাভা শেখা যেতে পারে তার কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক, 

  1. Pay matters. সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে যে প্রোগ্রামিং ইন্ডাস্ট্রিতে জাভা প্রোগ্রামাররা অন্যান্য প্রোগ্রামারদের চেয়ে অনেক বেশি বেতন পেয়ে থাকে।1
  2. পৃথিবীতে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডিভাইসে জাভা চলে। এছাড়া জাভা দিয়ে স্মার্টফোন থেকে শুরু করে সার্ভার, এটিএম মেশিন (ATM Machine), পয়েন্ট অব সেল (POS) এর টার্মিনাল, ব্লু-রে প্লেয়ার, টেলিভিশন, সেট-টপ বক্স (STB), ইন্টারনেট অব থিং (Internet of thing) এর গেটওয়ে (Gateway), মেডিকেল ডিভাইস (Medical Device), আমাজনের কিন্ডল (Kindle), অটোমোবাইল এবং আরও অনেক কিছুতে প্রোগ্রাম করা যায়। 
  3. জাভা সাধরাণত খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং রিয়েল ওয়ার্ল্ড অ্যাপ্লিকেশন (Real World Application)2 তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। যেমন, এন্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে জাভা ব্যবহার অপরিহার্য। বিশেষ বিশেষ শক্তিশালী ওয়েব সাইট যেমন, eBay.com, LinkedIn.com, Amazon.com, Facebook.com, ESPNcricinfo.com, Gmail.com, Netflix.com, Alibaba.com ইত্যাদিতে জাভা ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন এন্টারপ্রাইজ অ্যাপ্লিকেশন যেমন, অর্থনৈতিক সেবাসমূহ, স্বাস্থ্যসেবা, ম্যানুফ্যাকচারিং ইত্যাদির জন্য যেকোনো ইন্ডাস্ট্রিতে জাভার চাহিদা সর্বাগ্রে। 
  4. কিছুদিন আগেই জাভার ২১ তম জন্মদিন চলে গেল।3 এ থেকে একটি বিষয় সহজেই অনুমেয় যে জাভা খুব তাড়াতাড়ি পালিয়ে যাওয়ার মতো টেকনোলজি নয়।4 আরও দীর্ঘকাল এর চাহিদা অভিন্ন থেকে যাবে। সুতরাং এতে সময় ব্যয় করলে তা নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা নেই। 
  5. এর সোর্সকোড খুব সহজ ও পাঠযোগ্য (readable)। অন্য যেকোনো প্রোগ্রামিং ভাষা জানে এমন একজন প্রোগ্রামার খুব সহজেই একটি জাভাতে লেখা কোড দেখে বুঝতে পারবে যে কোডে কী লেখা আছে বা কোনো বিশেষ কোড দিয়ে কী কাজ করা হচ্ছে। 
  6. সি কিংবা সি++ এ কোড করার সময় আমাদের অনেক সময়ই লিংকিং (Linking)5, অপটিমাইজেশন (Optimization)6, মেমোরি অ্যালোকেশন (Memory Allocation)7, মেমোরি ডি-অ্যালোকেশন (Memory Deallocation)8, পয়েন্টার ডিরেফারেন্সিং (Pointer Dereferencing)9 ইত্যাদি নানা রকম জিনিস নিয়ে ভাবতে হয়। জাভার ক্ষেত্রে এগুলোর কথা ভাবতেই হয় না। খুব বেশি চিন্তাভাবনা না করেই নিশ্চিন্তভাবে জাভা কম্পাইলারের উপর সব কিছু ছেড়ে দেওয়া যায়। 
  7. জাভাতে অসংখ্য এপিআই (API)10 আছে যেগুলো খুবই স্টেবল (Stable), খুব বেশি চিন্তাভাবনা না করেই এগুলো নিশ্চিন্তমনে ব্যবহার করে খুব সহজেই অনেক বড় বড় প্রোগ্রাম লিখে ফেলা যায়। 
  8. এটি একটি ওপেন সোর্স প্রোগ্রামিং ভাষা। এর সোর্সকোড যে কেউ পড়তে পারে। 
  9. জাভা ভার্চুয়াল মেশিন সম্ভবত সফটওয়্যার জগতে সবচেয়ে চমৎকার সৃষ্টি। এটি জাভার সঙ্গে আরও অনেকগুলো ল্যাঙ্গুয়েজ11 যেমন, Groovy, Scala, Kotlin, Jython,Jruby, Clojure ইত্যাদি নিয়ে কাজ করা যায়। 
  10. গত ১৫ বছরে অনেকগুলো চমৎকার ডেভেলপমেন্ট এনভায়রনমেন্ট (Integrated Development Environment – IDE) তৈরি হয়েছে যেগুলো খুবই স্মার্ট এবং ইন্টেলিজেন্ট। যেমন, Eclipse, IntelliJ IDEA, Netbeans ইত্যাদি। এগুলো ব্যবহার করে খুব আয়েশের সঙ্গেই কোড করা ও ডিবাগ করা যায়। 
  11. এটি একটি অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড, টাইপ সেইফ প্রোগ্রামিং ভাষা। 
  12. এটি পোর্টেবল, যেকোনো প্ল্যাটফর্মে চলে (প্ল্যাটফর্ম ইনডিপেন্ডেন্ট)। একবার কোড লিখে সেটি যেকোনো মেশিনে (উইন্ডোজ, লিনাক্স, ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমে) চালানো যায়। 
  13. এর অনেক বড় কমিউনিটি সাপোর্ট রয়েছে। সারা পৃথিবীতে প্রায় ১০ মিলিয়ন জাভা প্রোগ্রামার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। 
  14. এটির পারফরমেন্স নিয়ে বলা চলে কোনো সন্দেহ নেই। 
  15. ইন্ডাস্ট্রি গ্রেডেড, বড় বড় এন্টারপ্রাইজ অ্যাপগুলো সাধারণত জাভা দিয়ে লেখা হয়। 
  16. এটি পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা।12
  17. এছাড়াও জাভার একটি শক্তিশালী রোডম্যাপ রয়েছে। ওরাকল এতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। 


পাদটীকা
1https://gooroo.io/GoorooTHINK/Article/16300/Programming-languages--salaries-and-demand-May-2015/18672 
2 Real world application – রিয়েল ওয়ার্ল্ড অ্যাপ্লিকেশন বলতে বোঝায় যেগুলো মানুষের জীবন-যাত্রার সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত, যেমন, হেল্থকেয়ার সিস্টেম, ব্যাংকিং সিস্টেম, স্টক এক্সচেঞ্জ ইত্যাদি। এগুলো ছাড়া আধুনিক মানুষের জীবনধারণ প্রায় কঠিন হয়ে যাবে। পোকেমন গেমকে রিয়েল ওয়ার্ল্ড অ্যাপ্লিকেশন বলা যাবে না, কারণ এটি না খেললে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যহত হবে না। 
3 ২৩, মে ১৯৯৫-তে প্রথম রিলিজ হয়। now you do the math :) 
4 http://turnoff.us/geek/big-numbers/ 
5 সি কিংবা সি++ প্রোগ্রামিং করার সময় সাধারণত স্ট্যান্ডার্ড লাইব্রেরিগুলো দেওয়াই থাকে, কিন্তু আমরা যদি অন্য কোনো লাইব্রেরীর কোনো বিশেষ অংশ যা কিনা আগেই অন্য কেউ তৈরি করে রেখেছে, আমাদের প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত করতে চাই তাহলে যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাকে লিংকিং বলা হয়। 
6 একটি প্রোগ্রামকে আরও বেশি কার্যকর করার উদ্দেশ্যে বিশেষ কিছু উপায় ব্যবহার করে কোডকে পরিবর্তন করা। 
7 প্রোগ্রামারের ভ্যারিয়েবলগুলো স্টোর করতে মেমোরির দরকার হয়। মেমোরি অ্যালোকেশন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে করে প্রোগ্রামকে ভার্চুয়াল বা ফিজিক্যাল মেমোরি স্পেস ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। 
8 প্রোগ্রাম একটি মেমোরি ব্লক ফ্রি করে দেয় যাতে করে অন্য প্রোগ্রাম সেই মেমোরি ব্লক ব্যবহার করতে পারে। 
9 কোনো পয়েন্টার যে মেমোরি লোকেশনকে পয়েন্ট করে সেখান থেকে ডেটা পড়া। 
10 API (Application Programming Interface) - কতগুলো কোড যেগুলো অন্য কোনো সফটওয়্যারের কম্পোনেন্টের সঙ্গে কাজ করতে পারে এবং এগুলো ব্যবহার করে খুব সহজেই একটি প্রোগ্রাম লিখে ফেলা যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, যেকোনো স্মার্টফোন স্যাটেলাইট থেকে জিপিএস কোঅর্ডিনেটস পড়তে পারে। এখন কোনো প্রোগ্রাম বা অ্যাপে জিপিএস কোঅর্ডিনেট দরকার হতে পারে। এই জিপিএস কোঅর্ডিনেট পড়ার জন্য APIবা কোড আগে থেকে লেখায় আছে যেগুলো সহজেই সেই অ্যাপ যুক্ত করা যায়, নতুন করে লেখার প্রয়োজন পরে না। 
11 https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_JVM_languages 
12 http://www.tiobe.com/tiobe_index?page=index

No comments:

Post a Comment